
এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৩ কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জনের জন্য প্রয়োজন ভালো প্রস্তুতি। আর সে ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য দরকার পরিকল্পনা মাফিক পড়াশোনা। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন পড়লে পরীক্ষার সময় চাপ অনেক কমে যায়।
রুটিন মাফিক পড়াশোনায় আসবে ভালো ফলাফল পড়াশোনার রুটিন কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে থাকছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু পরামর্শ।
বাসায় এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ২০২৩ পড়াশোনা রুটিন দুই রকমের হতে পারে:-
১. সাপ্তাহিক অর্থাৎ এটা পরীক্ষার সময় সারা অন্য যেকোনো সময়ের জন্য।
২. পরীক্ষার আগ মুহূর্তে পড়াশোনার প্রস্তুতির জন্য।
দৈনিক পড়ার রুটিন এইচএসসি ২০২৩
দৈনন্দিন পড়ার রুটিন তৈরি করার পূর্বে আমরা ২৪ ঘণ্টাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিতে পারি। এমনিতে ই দীর্ঘ ২৪ ঘন্টা কোন হিউম্যান একটিভ থাকতে পারে না। তাই যেটুকু সময় মানুষ কাজে লাগাতে পারে সেই সময়টুকুই ধরে একটি রুটিন তৈরি করা হয়। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আমরা প্রতিদিনকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিতে পারি। আর সেগুলো হল:-
- দিনের প্রথম ভাগ অর্থাৎ সকালবেল
- দিনের মধ্যভাগ বা দুপুর / বিকেল
- দিনের শেষ ভাগ অথবা সন্ধ্যা / রাত।
উপরোক্ত এই তিনটি ভাগকে কেন্দ্র করে ই আজকের আমাদের এই দৈনন্দিন রুটিন এইচএসসি ২০২৩ তৈরি করা হবে বিশেষত আজকের এই আর্টিকেলটি যদিও আমরা এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মাথায় রেখে তৈরি করছি তারপরেও এই ওয়েবসাইটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে শুরু করে সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার রুটিন দেওয়া আছে।
মাত্র ছয়টি নিয়ম মানলেই একজন শিক্ষার্থী ভালো ফলাফল করার জন্য একটি সুন্দর পড়াশোনার রুটিন তৈরি করতে পারবে। নিয়ম ছয়টি নিচে দেওয়া হল:-
- প্রথমত শিক্ষার্থীর পড়ার রুম সেট করবে কারণ পড়ালেখার পরিবেশ থেকেই সত্তর পার্সেন্ট ভালো ফলাফল সম্পন্ন হয়। তাই প্রতিটা শিক্ষার্থীদের মাথায় রাখতে হবে পড়ার রুম সুন্দরভাবে গুছিয়ে রাখতে।
- শিক্ষার্থীদের কে নির্ধারণ করতে হবে কোন বিষয় থেকে পড়া শুরু করবে
- দৈনিক ১০ ঘণ্টা না পড়ে নিয়মিত মনোযোগের সাথে ৬ ঘন্টা পড়লে সেটা বেশি কাজে আসবে।
- পড়তে বসার পর কখনো হ্যান্ডসেট বা মোবাইল ফোন কাছে রাখা যাবে না। কারণ এটি পড়াশোনার মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
- একটানা দীর্ঘক্ষণ কখনোই পড়াশোনা করা যাবে না, কারণ এতে শিক্ষার্থী ক্লান্ত হয়ে পড়বে। পড়ার টেবিলে এক বোতল পানি রাখতে হবে এবং মাঝে মাঝে পড়ার ফাঁকে ফাঁকে পানি পান করতে হবে।
- পড়াশোনায় কখনো ফাঁকি দেওয়া যাবে না কারণ মনে রাখতে হবে অন্যকে ফাঁকি দিচ্ছ না নিজে নিজেকে ফাঁকি দিচ্ছো। পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন কৌশল ও পদ্ধতি নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে।
- পড়াশুনা শুধুমাত্র সকাল সন্ধ্যা পদ্ধতিতে করলেই হবে না পড়ালেখা তিন থেকে চারটি পদ্ধতিতে বা ভাগে করতে হবে।
সকাল বেলার পড়ার রুটিন
দিনের প্রথম ভাগ অর্থাৎ ভোরবেলায় একজন শিক্ষার্থীকে ঘুম থেকে উঠতে হবে। যদি একজন শিক্ষার্থী খুব ভোর রাতে উঠে পড়াশোনা শুরু করে, তাহলে পড়াশোনার জন্য ব্যাপক সময় পাওয়া যায়। আর এই সময় পড়াশোনায় মনোযোগ সবচেয়ে বেশি থাকে যা সারাদিন পড়াশোনা করার চেয়ে উত্তম।
একজন শিক্ষার্থীর উচিত পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মাঝে একটু হালকা ব্যায়াম করার জন্য হাঁটাহাঁটি করা। এজন্য ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় নিতে হবে। এরপর সঙ্গে সঙ্গে পড়ার টেবিলে বসতে হবে।
এ সময় মুখস্ত নির্ভর পড়াগুলো পড়া যেতে পারে, যা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মুখস্ত হয়ে যাবে। সকাল ৮ টা কিংবা ৯ টা পর্যন্ত এভাবে মুখস্থ নির্ভর পড়াগুলো শেষ করতে পারা যাবে।
এরপর শিক্ষার্থীকে সকালের নাস্তা করতে হবে। তারপর ১০ মিনিট বিরতি নিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করে সকালের পড়াশোনার পুনরায় রিভিশন করতে হবে। এরপর বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে আর যদি বিদ্যালয় বন্ধ থাকে তাহলে ১ ঘন্টার মত রেস্ট নিতে হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে দুপুর পর্যন্ত পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে হবে। এ সময় শিক্ষার্থীর ইচ্ছামত পছন্দের যেকোন বিষয় পড়তে পারবে, তবে এই সময় ইংরেজি অথবা বাংলা পড়া ভালো।
তবে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যে, একটানা দীর্ঘক্ষণ পড়া যাবে না। ৪৫ মিনিট কিংবা এক ঘন্টা পর পর ৫-১০ মিনিটের জন্য বিরতি নিতে হবে। বিরতি না নিয়ে একটানা পড়লে, সে পড়া বেশি কার্যকর হয় না।
এছাড়া শিক্ষার্থীকে খুবই সতর্ক থাকতে হবে যেন পড়ার সময় আশেপাশে মনোযোগ নষ্ট করে এমন কোন ডিভাইস না থাকে। নিজের ব্যবহৃত মোবাইলটি সবসময় দূরে রাখতে হবে পড়ার সময়।
দুপুর বা বিকাল বেলার পড়ার রুটিন
দিনের মধ্যেভাগে বিদ্যালয় থেকে ফিরে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে গোসল ও দুপুরের খাবার সম্পন্ন করে হালকা একটু ঘুমিয়ে নেয়া যেতে পারে।
ঘুম থেকে উঠে পরিষ্কার হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকের দেওয়া কাজগুলো প্র্যাকটিস করতে পারেন। আর যদি এরকম কোন বিষয় না থাকে তাহলে ইচ্ছেমতো যে কোন বিষয় পড়লেই চলবে।
এরপর বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খেলাধুলো বা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আড্ডা দেওয়া অথবা ঘুরাঘুরি করা যাবে। অথবা এই সময়ে সামাজিক বিভিন্ন কাজকর্ম করতে পারা যাবে।
রাতের পড়াশোনার রুটিন
রাতের বেলা হল একজন শিক্ষার্থীর পড়ার একদম শেষভাগ। রাতে পড়তে বসার পূর্বে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই হালকা একটু নাস্তা করতে হবে। এরপর একটানা এশার নামাজ পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। এরপর রাতের খাবার শেষ করে পুনরায় পড়ার টেবিলে মনোনিবেশ করতে হবে। রাতের বেলা শিক্ষার্থী চাইলে একটু বেশি কঠিন বিষয় গুলি পড়তে পারবে।
এ সময় রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান কিংবা গণিত অথবা উচ্চতর গণিত এ ধরনের কঠিন বিষয়গুলো প্র্যাকটিস করতে পারেন।
রাতে শিক্ষার্থীকে যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত পড়া সমাপ্ত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত পড়ার। তবে খুব বেশি রাত করে ঘুমাতে যাওয়া উচিত নয়, এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। পড়া শেষ হলে রাতে ঘুমাতে হবে এবং পরবর্তী দিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার প্রস্তুতি নিতে হবে।
আশা করি, একজন এইচএসসি পড়ুয়া শিক্ষার্থীর আদর্শ একটা রুটিন সম্পর্কে ধারণা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে দিতে পেরেছি । তবে এই রুটিনটি একজন শিক্ষার্থী ইচ্ছা করলে নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে গুছিয়ে নিতে পারবে। রুটিন মাসে পড়াশোনা করলে পড়াশোনার প্রতি তাগিদ একটু বেশি থাকে এতে সময়ের অপচয় কম হয় পড়াশোনার কার্যকর ভাবে করা যায়।
নিচের অংশে শিক্ষার্থীদের জন্য ফাকা দুইটি রুটিন এর পিডিএফ দেয়া হলো । তোমরা এই পিডিএফ গুলো ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিজেদের জন্য উপরের নির্দেশনা অনুযায়ী সুন্দর একটি রুটিন বানিয়ে ফেলতে পারবে। আবার এই পিডিএফ এ থাকা স্টাইল অনুযায়ী নিজেই সুন্দর করে রুটিন তৈরি করে নিতে পারো। নিচের রুটিন দুটি ভালো লাগলে কমেন্ট করে জানাও। আরো রুটিন চাইলে তা কমেন্টে জানাও।
<
শেষ কথা
আশা করছি দৈনিক পড়ার রুটিন HSC সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন। দৈনিক পড়ার রুটিন HSC সম্পর্কে যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে এখানে প্রশ্ন করুন। এই নিবন্ধের কোনো অংশ বুঝতে না পারলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন, Result Insider BD টিম আপনার সমস্যার সমাধান করতে সবসময় চেষ্টা করে। এ বিষয়ে আরো তথ্য জানতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন ও ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন। সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।