
ট্রেনের টিকিট বা অগ্রিম ট্রেনের টিকেট কাটার নিয়ম সম্পর্কে জানা আমাদের কাছে অনেক সময় খুবই জরুরি হয়ে পড়ে। অনেক সময় দেখা যায়, জরুরি সময়ে ট্রেনের টিকিট কাটার বা অগ্রিম টিকিট কাটার সঠিক নিয়ম অনেকেই বলতে পারেনা। আপনারা যারা এরকম সমস্যায় পড়েন, তাদের জন্যই আমাদের এই আর্টিকেল। আমাদের এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আপনারা ট্রেনের টিকিট বা অগ্রিম ট্রেনের টিকিট কাটার সকল নিয়ম জানতে পারবেন। আশা করি, আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ে আমাদের সাথে থাকবেন। ট্রেনের টিকিট অথবা অগ্রিম টিকিট সম্পর্কিত সকল হালনাগাদ তথ্য আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে পোস্ট করি।
আগের দিনের তুলনায় এখন ট্রেনযাত্রা অনেক বেশি নিরাপদ ও আরামদায়ক। যার ফলে দূরের যাত্রার ক্ষেত্রে অনেকেই আমরা অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় টেনের যাত্রাকেই বেশি সুবিধাজনক মনে করি। ফলে ট্রেন যাত্রায় অনেক সময় যাত্রী বেশি হওয়ার কারণে টিকিট স্বল্পতা দেখা দেয়। ট্রেনের টিকিট সংকটের কারণে অনেকেই চান যে আগে থেকে ট্রেনের টিকিট কেটে নিশ্চিন্তে থাকা কিন্তু অগ্রিম টিকিট কিভাবে কাটতে হয় কতদিন আগে কাটতে হয় তা আমরা অনেকেই জানিনা।
বাংলাদেশের পেক্ষাপটে সবথেকে বেশি ট্রেনের টিকিটের সংকট দেখা দেয় দুই ঈদের বেলায় ট্রেনের টিকিট ঈদের সময় পাওয়াটা যে কত টা কষ্টের সেটা একজন যাত্রী বলতে পারবে।
অগ্রিম টিকিট কতদিন আগে কাটা যায়
আমরা চাইলেই যে কোন সময় বা যে কোন দিন অগ্রিম টিকিট কাটতে পারিনা। অগ্রিম টিকিট কাটার সঠিক নিয়ম আছে।
আমরা অনেকেই জানি যে, বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ পূর্বে ট্রেনের টিকিট 10 দিন আগে থেকেই দেওয়া শুরু করতো। তাতে করে বাংলাদেশের সকল যাত্রীরা তাদের যাত্রা শুরুর 10 দিন আগে থেকে – একদিন আগ পর্যন্ত ট্রেনের আগাম টিকিট কাটতে পারতো। এতে করে টিকিট কাটা অনেক সহজ ছিল। একজন ব্যক্তি অনেকদিন সময় পেত তার টিকিট কাটার জন্য এবং চিন্তাভাবনা করার জন্য। কিন্তু বর্তমানে ট্রেনের টিকিট আর দশ দিন আগে কাটা যায় না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির সময় পরিবর্তন করেছে। তবে অগ্রিম টিকিট কাটার সময় পরিবর্তন করার পিছনে কি কারণ তা বিস্তারিত জানানো হয়নি। বাংলাদেশ সরকার ট্রেনের যাত্রা সুখকর করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে এটি একটি পদক্ষেপ হতে পারে।
বর্তমানে কতদিন আগে ট্রেনের টিকিট অগ্রিম কাটতে পারবে তা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের রেল ও যোগাযোগ মন্ত্রনালয় থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় ৯ মার্চ ২০২১ সালে। সাধারণত এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে, পূর্ববর্তী ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটার সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আরো জানায় যে, রেলপথে যাত্রীরা ১০ দিন আগে অগ্রিম টিকিট কাটার এই সুযোগটি হারাচ্ছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আরো জানান যে, ১০ দিনের পরিবর্তে ৫ দিন আগে থেকে রেলওয়ে টিকিট অগ্রিম কাটা যাবে। সকল রেলপথের যাত্রীরা তার যাত্রা দিনের ৫ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট কাটতে পারবে। বাংলাদেশের সকল রেলপথের সকল যাত্রী ও সকল ট্রেনের জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ আপনি যদি মাসের ৬ তারিখে ট্রেনে যাত্রা শুরু করতে চান, তাহলে আপনি সেই মাসের ১ তারিখ থেকেই ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কিনতে পারবেন।
অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটার নিয়ম
আপনি চাইলেই ঘরে বসে কম্পিউটার বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট অগ্রিম ক্রয় করতে পারবেন। তবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম এবং সীমাবদ্ধতা আছে। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারবেন সকাল ৪ টা থেকে রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। অর্থাৎ আপনাদেরকে অবশ্যই এই সময়ের মধ্যে টিকিট ক্রয় করতে হবে। রাত ১২ টা থেকে সকাল ৪ টা পর্যন্ত অনলাইনে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারবেন না। তবে আপনারা ম্যানুয়ালি কাউন্টার থেকে ট্রেনের টিকিট যেকোনো সময় কাটতে পারবেন।
যানজটের ভোগান্তিত এড়াতে বর্তমানে ট্রেন সবচাইতে জনপ্রিয় একটি পরিবহন ব্যবস্থা। তাই আপনাকে অবশ্যই ট্রেনের টিকিট কাটার নিয়ম সম্বন্ধে ভালোভাবে জানতে হবে।
ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটার পদ্ধতি ২০২২
- ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার জন্য আপনাকে অবশ্যই এই ওয়েবসাইটে www.eticket.railway.gov.bd ভিজিট করতে হবে
- তারপর আপনাকে যাত্রা সম্পর্কে সকল তথ্য দিতে হবে
- এরপর বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং বা মাস্টার কার্ড ব্যবহার করে টিকিটের মূল্য পরিশোধ করতে হবে
- তারপর যাত্রীর মেইলে, ইমেইল এড্রেসে টিকিটের পিডিএফ ফাইল চলে আসবে
- আপনারা যদি বিকাশ ব্যবহার করেন, তবে ট্রেনের টিকিটের মূল্য বিকাশের মাধ্যমে দিতে পারবেন
- এর জন্য আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে হবে
ট্রেনের কত শতাংশ কিটিট অনলাইনে বিক্রি করা হয়?
এখানে জানার বিষয় হল যে, একটি ট্রেনের ৫০ শতাংশ আসন বিক্রি হয় অনলাইনের মাধ্যমে এবং বাকি ৫০ শতাংশ আসন বিক্রি হয় কাউন্টার এর মাধ্যমে। তাই আপনারা চাইলে ঘরে বসে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারেন এবং সেটা পেমেন্ট করতে পারেন বিকাশের মাধ্যমে। অনলাইনে ট্রেনের টিকিট সম্পূর্ণ করার পর আপনার বিকাশ অ্যাকাউন্ট নাম্বার চাইবে। বিকাশ একাউন্ট নাম্বার দেওয়ার পর আপনার একাউন্টে একটি ওটিপি কোড আসবে, আপনার একাউন্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা থাকলে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করা যাবে।
আপনারা নিশ্চয় জানেন যে, ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার ক্ষেত্রে অনেক ভিন্নতা এসেছে। দীর্ঘ ১৫ বছর ‘সিএনএসবিডি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ট্রেনের টিকিট বিক্রির সাথে জড়িত ছিল। তাদের সাথে চুক্তি শেষ হওয়ার পর ২০২২ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত তারা টিকিট বিক্রি করে। এরপর নতুন চুক্তি অনুযায়ী ২৬ মার্চ ২০২২ থেকে নতুন করে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু করে সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি (Shohoz-Synesis-Vinsen)।
শুরুর দিকে shohoz.com এর কোন ধরনের অ্যাপ ছিল না। তবে সম্প্রতি অ্যাপের মাধ্যমে shohoz.com এর ট্রেনের টিকিট ক্রয় করা যায়। আপনারা যারা ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে চান তারা যাত্রার ৫ দিন পূর্বে থেকে অগ্রিম টিকিট করতে পারবেন। আপনারা যদি ট্রেনের অবস্থান ও সময়সূচী জানতে চান তবে এসএমএস করতে পারেন ১৬৩১৮ নম্বরে।