
অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কি? অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে – জেনে নিন
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ২০২২ঃ নতুন জন্ম নিবন্ধন করার নিয়ম। অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন কিভাবে করে? অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ফর্ম পুরন। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ফর্ম পুরন পদ্ধতি ২০২২। কিভাবে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ফর্ম পুরন করে। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কিভাবে করবো? অনলাইনে ঘরে বসে জন্ম নিবন্ধন ফর্ম পুরন করা যায় কিভাবে?
শিশু যখন জন্মগ্রহণ করে তখন সহকারী রেজিষ্টারের শিশুর নাম দাখিল করানো হলো জন্ম নিবন্ধন। জন্ম নিবন্ধন আগে কাগজে-কলমে করা হলেও এখন তা অনলাইনে করা যায়। বর্তমানে অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন ফরম পূরণ করা যায় এবং জন্ম নিবন্ধন সংশোধন, জন্ম নিবন্ধনের তথ্য যাচাই জন্ম নিবন্ধন বিষয়ক যাবতীয় কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করা যায়।
পূর্বের সময়ে জন্ম নিবন্ধন করার জন্য অনেক হয়রানির শিকার হতে হতো যা এখন কমে গিয়েছে। জন্ম নিবন্ধন অনলাইন হওয়াতে শিশুর পিতা মাতার খাটনি অনেক কমে যায় এবং খুব সহজেই তারা নতুন জন্ম নিবন্ধন ফরম অনলাইনে পূরণ করে তা জমা দিতে পারছেন। এছাড়া যাদের জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে তারা অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে পারছে এবং জন্ম নিবন্ধন এর যাবতীয় তথ্য যাচাই করা যাচ্ছে অনলাইনে। সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে তাই জন্ম নিবন্ধন নিয়ে নতুন করে কাউকে আর হেনস্থা হতে হচ্ছে না।
জন্ম নিবন্ধন ছাড়া এখন দেশে কোন সরকারি কাজ সহজ ভাবে সম্পন্ন করা যায়। এমন কিছু ক্ষেত্র আছে যেখানে জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। কিন্তু জন্ম নিবন্ধন করার সময় অনেকেই হয়রানির শিকার হন কারণ অনেক বেশি কাগজপত্র জমা দিতে হয় বারবার সেই প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। কিন্তু বর্তমানে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন হয় খুব সহজেই একজন ব্যক্তি তার শিশুর জন্ম নিবন্ধন করতে পারছে অনলাইনে। একটি স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার এবং সেই ডিভাইসে ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন ফরম পূরণ করা যায় তা সাবমিট করে দেওয়া যায়। পরবর্তীতে সংশোধনের জন্য আবেদন করা যায় এবং সংশোধন করা যায় অনলাইনে। তাই এটি অনেকের ভোগান্তি কমিয়ে দিয়েছে।
অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কি?
জন্ম নিবন্ধন এর সাধারন যে সংজ্ঞা অর্থাৎ একজন শিশুর জন্মের পর সহকারী রেজিষ্টারের তার নাম দাখিল করা এবং জাতীয় তা নিশ্চিত করা হলো জন্ম নিবন্ধন। একজন শিশু যখন জন্মগ্রহণ করে তার তখন কোন জাতীয়তা থাকেনা শিশুর পিতা মাতা শিশুর জন্ম তারিখ ও জন্মের পর একটি নাম দিয়ে সেই নাম অনুসারে সহকারী রেজিষ্টারের তার নাম দাখিল করে। জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে একটি শিশুর জাতীয়তা নিশ্চিত করা হয়। রাষ্ট্র থেকে শিশুকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় জন্মের পর। শিশু যে রাষ্ট্রের জন্ম গ্রহন করে সেই রাষ্ট্র থেকেই তাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এছাড়া জন্ম নিবন্ধনে উল্লেখ থাকে শিশুর জন্ম তারিখ, শিশুর বয়স, ধর্ম এবং জাতীয়তা। শিশুর বাবা মার নাম উল্লেখ থাকে। বাংলাদেশ একটি নতুন শিশু জন্মগ্রহণ করার পর অবশ্যই তার জন্ম নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক। এর আগে জন্ম নিবন্ধন করা হতো কাগজে-কলমে কিন্তু বর্তমানে তা সম্পূর্ণ অনলাইনে করা হচ্ছে আর এটিই হল অনলাইন জন্ম নিবন্ধন।
জন্ম নিবন্ধন কি কি কাজে লাগে?
জন্ম নিবন্ধন সর্বাধিক ব্যবহার করা হয় একজন ব্যাক্তি জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। 18 বছর বয়সের পূর্বে একজন ব্যক্তি জাতীয় পরিচয় পত্র বা নাগরিক পরিচয় সনদ পায়না। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি কাজে তার পরিচয় জানার জন্য ব্যবহৃত হয় জন্ম নিবন্ধন। বাংলাদেশ 18 বছর বয়সের পূর্বে যে সকল ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক তা হল
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে
- ভোটার তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে
- জাতীয় পরিচয় পত্র প্রাপ্তির ক্ষেত্রে
- পাসপোর্ট ইস্যু
- ব্যাংক হিসাব খুলতে
এছাড়াও আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজে জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক ব্যবহার করতে হয়। অনেক থেকে জন্ম নিবন্ধন এর ফটোকপি চায় অফিস গুলো। সে কারণেই জন্ম নিবন্ধন এত গুরুত্বপূর্ণ একজন নাগরিকের কাছে।
অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন এর নিয়ম
অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন এখন খুবই সহজ। পূর্বে সময় হাতে লিখে জন্ম নিবন্ধন এর জন্য আবেদন করতে হতো। বর্তমানে ঘরে বসে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন এর জন্য আবেদন ফরম পূরণ করা যায়। আবেদন ফরম পূরণ শিশু জন্ম নিবন্ধন এর জন্য একটি ডিজিটাল কার্ড ও পাওয়া যায়। আপনার নিজের স্মার্টফোন অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করেই ঘরে বসে এই জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা যাবে।
অনলাইন জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
০ থেকে থেকে ৪৫ দিন এর মধ্যে হলে
- টিকা কার্ড/ইপিআই কার্ড
- পিতা ও মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি
- পিতা ও মাতা জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি
- বাসার হোল্ডিং নাম্বার
- হোল্ডিং ট্যাক্স এর রশিদ
- পিতা-মাতার অথবা অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার
*পিতা ও মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি বাংলা ও ইংরেজি বাধ্যতামুলক
শিশুর বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলে
- ইপিআই কার্ড/স্বাস্থ্যকর্মীর প্রত্যয়ন পত্র (স্বাক্ষর ও সিল সহ)
- পিতা ও মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি
- পিতা ও মাতা জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি
- বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়ন পত্র (যদি থাকে)
- বাসার হোল্ডিং নাম্বার এবং হাল সনের হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ
- আবেদনকারীর পিতা মাতা অথবা অভিভাবকের মোবাইল নাম্বার
- আবেদনকারীর এক কপি রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি
*পিতা ও মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি বাংলা ও ইংরেজি বাধ্যতামুলক
আবেদনকারীর বয়স ৫ বছরের বেশি হলে
- বয়স প্রমাণের জন্য চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যয়ন পত্র।
- সরকার কর্তৃক প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী অথবা জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট অথবা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত যে কোন পরীক্ষার সার্টিফিকেট (যদি থাকে)
- পিতা ও মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি
- পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি
- জন্মস্থান ভাই স্থায়ী ঠিকানা প্রমাণের জন্য পিতা-মাতা দ্বারা স্বনামে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ঘোষিত আবাসস্থল এর বিপরীতে হালনাগাদ কর পরিশোধের প্রমাণপত্র।
*পিতা ও মাতার অনলাইন জন্ম নিবন্ধন কপি বাংলা ও ইংরেজি বাধ্যতামুলক
এছাড়াও অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য আবেদন করা যায়। যদি কারো জন্ম নিবন্ধন এ কোন ভুল হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংশোধন করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া জন্ম নিবন্ধন বাংলা থেকে ইংরেজি করা যায় অনলাইনে। জন্ম নিবন্ধন এর যাবতীয় বিষয়ে এখন অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা যায়।
শেষ কথা
আশা করছি অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে সম্পর্কে আপনি জানতে পেরেছেন। অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে সম্পর্কে যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে এখানে প্রশ্ন করুন। এই নিবন্ধের কোনো অংশ বুঝতে না পারলে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করুন, Result Insider BD টিম আপনার সমস্যার সমাধান করতে সবসময় চেষ্টা করে। এ বিষয়ে আরো তথ্য জানতে আমাদের ফেসবুক গ্রুপে জয়েন করুন ও ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন। সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।